রোবট দিয়ে অপারেশন !
হামবুর্গের মার্টিনি ক্লিনিকে সারা দুনিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রস্টেট অপারেশন করা হয়৷ সেঅপারেশন যাঁরা করেন, তাঁদের মধ্যে নামকরা শল্যচিকিৎসক ছাড়া একটি রোবটও আছে!
প্রফেসর আলেক্সান্ডার হ্যেজে প্রস্টেট অপারেশনের স্পেশালিস্ট৷ তাঁর সহকারী কিন্তু একটি ব্যতিক্রম: সে হলো একটি রোবট৷ এই রোবটই প্রফেসর হ্যেজেকে শরীরের একটি ক্যানসারগ্রস্ত অংশ পুরোপুরি কেটে বাদ দিতে সাহায্য করে৷ এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, নয়ত আবার নতুন করে মেটাস্টাসেস তৈরি হতে পারে৷
প্রফেসর হ্যেজে বলেন, ‘‘প্রস্টেট অপারেশনে একেবারে নিখুঁতভাবে কাজ করাটা খুব জরুরি৷ অতি স্বল্প পরিসরের মধ্যে মিলিমিটার বাই মিলিমিটার কাজ করতে হয়, কেননা সেখানে পেশি, স্নায়ু, উরেথ্রা, প্রস্টেট গ্ল্যান্ড, সবই এসে জুটেছে৷”
এখানেই রিমোট কন্ট্রোল শল্যচিকিৎসক ‘দা ভিঞ্চি’ রোবটের ডাক পড়ে৷ প্রফেসর হ্যেজে হলেন সার্জন আর ‘দা ভিঞ্চি’ হলো তাঁর সহকারী৷
অপারেশনটা এতই জটিল যে, এই হাই-টেক অ্যাসিস্টেন্ট ছাড়া তা এত নিখুঁতভাবে করা সম্ভব হতো না৷ তবে ‘দা ভিঞ্চি’ কাজ শুরু করার আগে ডাক্তাররা পেশেন্টের পেটে গ্যাস পাম্প করে স্ক্রিনের ইমেজটাকে আরো বড় করে নেন৷ এর পর ক্যামেরা আর ইনস্ট্রুমেন্ট ঢুকিয়ে দেওয়া হয়৷
রোবট আর্মটি ডক করানো হলো…
এবার সার্জন তাঁর জায়গা নিলেন – তবে পেশেন্ট থেকে বেশ কয়েক মিটার দূরে৷
‘ভার্চুয়াল অপারেশন’
প্রফেসর হ্যেজে জানালেন, ‘‘অনেক পেশেন্ট জিগ্যেস করেন: ‘আপনি কি আমার থেকে বড় বেশি দূরে নন? আপনি তো আমার পেটের মধ্যে না দেখে, টেলিভিশনের স্ক্রিনটায় দেখছেন৷’ অথচ স্ক্রিনে যা দেখা যাচ্ছে আর আমার হাত যা করছে, তাতে আমি যে কোনো ম্যানুয়াল অপারেশনের চেয়ে পেশেন্টের বেশি কাছে রয়েছি৷”
সার্জন ভার্চুয়াল অপারেশন করছেন: চোখ স্ক্রিনের ওপর, হাতের আঙুলগুলো ‘লুপ’-এর মধ্যে৷ প্রফেসর হ্যেজের হাতগুলো যা করছে, অপারেশন টেবিলে তাঁর হাই-টেক সহযোগী রোবট পেশেন্টের পেটের মধ্যে পিন্সেট আর কাঁচি ঢুকিয়ে ঠিক সেই মুভমেন্টগুলো করছে৷ হাত কাঁপার ঝুঁকিটা এভাবে বাদ দেওয়া সম্ভব হয়েছে৷
প্রফেসর হ্যেজে বললেন, ‘‘আমি সত্যিই ত্রিমাত্রিক দেখতে পাচ্ছি, তার উপর আবার দশগুণ বড় করে৷ বিশেষ করে যেসব অপারেশনে অতি স্বল্প পরিসরের মধ্যে ছোট ছোট অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নিয়ে কাজ করতে হয়, সেখানে এটা একটা বড় সুবিধা বৈকি৷”
রোবট আর সার্জন মিলে এ যাবৎ মোট ৭৫০টি অপারেশন করেছেন৷ মিলিমিটার মিলিমিটার করে প্রস্টেট গ্ল্যান্ডটি ছাড়িয়ে নেওয়া হলো৷ এবার সেই নাটকীয় মুহূর্ত৷ নাইকুণ্ডুলীতে একটি ছোট ফুটো দিয়ে রোগগ্রস্ত অঙ্গটিকে টেনে বার করে নিয়ে আসা হলো৷ এখনই পরীক্ষা করে দেখা হবে, ক্যানসারগ্রস্ত টিস্যু পুরোপুরি দূর করা সম্ভব হয়েছে কিনা৷
হামবুর্গের এই ক্লিনিকে এ সবই গতানুগতিক ঘটনা: সারা দুনিয়ায় এখানেই সবচেয়ে বেশি প্রস্টেট অপারেশন করা হয়৷
মোট তিন ঘণ্টা অপারেশনের পর ডাক্তার আর রোবটের টিম টিউমারটিকে বাদ দিতে পেরেছেন৷ পেশেন্ট এখন ক্যানসার মুক্ত – তিনি এবার তাঁর স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে পারবেন৷
ঁপার ঝুঁকিটা এভাবে বাদ দেওয়া সম্ভব হয়েছে৷
প্রফেসর হ্যেজে বললেন, ‘‘আমি সত্যিই ত্রিমাত্রিক দেখতে পাচ্ছি, তার উপর আবার দশগুণ বড় করে৷ বিশেষ করে যেসব অপারেশনে অতি স্বল্প পরিসরের মধ্যে ছোট ছোট অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নিয়ে কাজ করতে হয়, সেখানে এটা একটা বড় সুবিধা বৈকি৷”
-তথ্য সুত্র:
http://dainikdonet.com/technology/3200
http://m.dw.com/bn/%E0%A6%B0%E0%A7%8B%E0%A6%AC%E0%A6%9F-%E0%A6%A6%E0%A6%BF%E0%A7%9F%E0%A7%87-%E0%A6%85%E0%A6%AA%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%87%E0%A6%B6%E0%A6%A8/a-38259749
http://dainikdonet.com/technology/3200
0 comments:
Post a Comment